শবে বরাতে দোয়া করা ও ক্ষমা চাওয়ার সঠিক নিয়ম/শবে বরাতের বিশেষ দোয়া/গুনাহ মাফের দোয়া/taqwa-dawah

 শবে বরাতে দোয়া করা ও ক্ষমা চাওয়ার সঠিক নিয়ম।

শবে বরাত (লাইলাতুল বরাত) ইসলামের একটি গুরুত্বপূর্ণ রাত, যা গুনাহ থেকে মুক্তি, রহমত ও বরকতের রাত হিসেবে গণ্য করা হয়। এই রাতে মহান আল্লাহ তাঁর বান্দাদের গুনাহ ক্ষমা করেন এবং রিজিক ও ভাগ্য নির্ধারণ করেন। তাই এ রাতে বেশি বেশি ইবাদত, দোয়া ও ক্ষমা প্রার্থনা করা উচিত।


শবে বরাতে দোয়া করা ও ক্ষমা চাওয়ার সঠিক নিয়ম/শবে বরাতের বিশেষ দোয়া/গুনাহ মাফের দোয়া/taqwa-dawah


১. শবে বরাতের বিশেষ দোয়া

এ রাতে যেকোনো দোয়া করা যায়, তবে নবীজি (সা.)-এর থেকে প্রাপ্ত কিছু দোয়া নিম্নে দেওয়া হলো:

(ক) ক্ষমা চাওয়ার দোয়া

اللَّهُمَّ إِنَّكَ عَفُوٌّ تُحِبُّ الْعَفْوَ فَاعْفُ عَنِّي উচ্চারণ: "আল্লাহুম্মা ইন্নাকা আফুউন, তুহিব্বুল আফওয়া, ফা’ফু আন্নি।" অর্থ: হে আল্লাহ! আপনি ক্ষমাশীল, ক্ষমা করতে ভালোবাসেন, তাই আমাকে ক্ষমা করে দিন।

(খ) গুনাহ মাফের দোয়া

رَبِّ اغْفِرْ لِي وَتُبْ عَلَيَّ إِنَّكَ أَنتَ التَّوَّابُ الرَّحِيمُ উচ্চারণ: "রাব্বিগফিরলী ওয়া তুব আলাইয়া ইন্নাকা আনতা তাওয়াবুর রহীম।" অর্থ: হে আমার রব! আমাকে ক্ষমা করুন এবং আমার প্রতি দয়া করুন। নিশ্চয়ই আপনি পরম ক্ষমাশীল ও দয়ালু।

(গ) রিজিক বৃদ্ধির দোয়া

اللَّهُمَّ ارْزُقْنِي رِزْقًا حَلَالًا طَيِّبًا مُبَارَكًا فِيهِ উচ্চারণ: "আল্লাহুম্মা রজুকনি রিজকান হালালান তইয়্যিবান মুবারাকান ফিহি।" অর্থ: হে আল্লাহ! আমাকে হালাল, পবিত্র ও বরকতময় রিজিক দান করুন।


২. শবে বরাতের আমল ও ইবাদত

(ক) নফল নামাজ পড়া

২, ৪, ৬, ৮ বা ১২ রাকাত নফল নামাজ পড়া যায়।

প্রত্যেক রাকাতে সূরা ফাতিহার পরে সূরা ইখলাস, সূরা ফালাক ও সূরা নাস পড়া উত্তম।

(খ) কোরআন তিলাওয়াত করা

এই রাতে বেশি বেশি কোরআন পড়া এবং এর অর্থ বোঝার চেষ্টা করা উচিত

(গ) জিকির ও তাসবিহ পাঠ করা

সুবহানাল্লাহ, আলহামদুলিল্লাহ, আল্লাহু আকবার, লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ ইত্যাদি বেশি বেশি পড়া।

(ঘ) তাওবা ও ইস্তিগফার করা

গুনাহ থেকে মুক্তির জন্য "আস্তাগফিরুল্লাহ" ১০০ বা ১০০০ বার বলা।


৩. শবে বরাতে ক্ষমা চাওয়ার নিয়ম

সত্যিকারের অনুশোচনা ও চোখের পানি সহকারে তাওবা করা।

অন্যের হক নষ্ট করলে তা ফেরত দেওয়া এবং আন্তরিকভাবে ক্ষমা চাওয়া।

পরিবার, আত্মীয়স্বজন ও বন্ধুদের জন্য দোয়া করা।

আল্লাহর কাছে প্রতিজ্ঞা করা যে, ভবিষ্যতে গুনাহ থেকে বিরত থাকবেন।


৪. যেসব কাজ থেকে বিরত থাকা উচিত

শবে বরাতকে কেন্দ্র করে কোনো বিদআত (নতুন কিছু সংযোজন) করা উচিত নয়।

পটকা ফোটানো, আতশবাজি বা অহেতুক আনন্দ-উৎসব করা ঠিক নয়।

এ রাতকে সম্পূর্ণ নির্দিষ্ট কোনো ইবাদতের রাত মনে না করা, বরং সব সময়ই ইবাদতের অভ্যাস করা উচিত।


উপসংহার

শবে বরাত হলো গুনাহ মাফের রাত, তাই এ রাতে বেশি বেশি দোয়া, ইবাদত, তাওবা ও জিকির করা উচিত। আল্লাহর কাছে নিজেকে সমর্পণ করলে তিনি অবশ্যই ক্ষমা করবেন এবং রহমত বর্ষণ করবেন।

Next Post Previous Post
No Comment
Add Comment
comment url