সুন্দরবনের ইতিহাস ও প্রাচীন সুন্দরবন। taqwa-dawah

 

সুন্দরবনের ইতিহাস

সুন্দরবন বিশ্বের বৃহত্তম ম্যানগ্রোভ বন, যা বাংলাদেশ ও ভারতের পশ্চিমবঙ্গে বিস্তৃত। এটি গঙ্গা, ব্রহ্মপুত্র ও মেঘনা নদীর বদ্বীপ অঞ্চলে অবস্থিত এবং ইউনেস্কো ঘোষিত বিশ্ব ঐতিহ্য স্থান।

প্রাচীন ইতিহাস

সুন্দরবনের নাম এসেছে ‘সুন্দরী’ গাছ থেকে, যা এই অঞ্চলের অন্যতম প্রধান গাছ। ধারণা করা হয়, বহু শতাব্দী আগে এই বনভূমি মানুষের বসবাসের উপযুক্ত ছিল না, তবে আর্য ও দ্রাবিড় সভ্যতার মানুষ এখানে বিচরণ করত।

মধ্যযুগে সুন্দরবন

মোগল শাসনামলে সুন্দরবন রাজস্ব আয়ের একটি উৎস ছিল। মোগলরা এই অঞ্চলে জলদস্যুদের আক্রমণ প্রতিরোধের জন্য বিভিন্ন ব্যবস্থা নেয়। ১৬৫৮ সালে সম্রাট আওরঙ্গজেবের সময় সুন্দরবনের কিছু অংশ চাষাবাদের জন্য পরিষ্কার করা হয়েছিল।

ব্রিটিশ শাসনকাল (১৭৫৭-১৯৪৭)

ব্রিটিশরা সুন্দরবনকে বন ব্যবস্থাপনার আওতায় আনে এবং ১৮৭৮ সালে এটিকে সংরক্ষিত বন ঘোষণা করা হয়। তারা বন ব্যবস্থাপনা, কাঠ আহরণ এবং চিতাবাঘ ও বাঘ শিকারকে নিয়ন্ত্রণের জন্য নীতিমালা প্রণয়ন করে।


১৯৪৭ সালে ভারত ভাগের পর সুন্দরবন বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যে বিভক্ত হয়। ১৯৭১ সালে বাংলাদেশের স্বাধীনতার পর সরকার সুন্দরবনের সংরক্ষণ ও ব্যবস্থাপনার জন্য বিশেষ উদ্যোগ নেয়। ১৯৮৭ সালে ভারতের অংশ এবং ১৯৯৭ সালে বাংলাদেশের অংশ ইউনেস্কো বিশ্ব ঐতিহ্য স্থান হিসেবে স্বীকৃতি পায়।

বর্তমান অবস্থা

বর্তমানে সুন্দরবন জলবায়ু পরিবর্তন, বন নিধন ও অবৈধ শিকারজনিত হুমকির মুখে। তবে বাংলাদেশ ও ভারত উভয় দেশই এর সংরক্ষণে নানা পদক্ষেপ নিচ্ছে, যার মধ্যে জাতীয় উদ্যান ও বাঘ সংরক্ষণ প্রকল্প গুরুত্বপূর্ণ।

সুন্দরবন শুধু প্রাকৃতিক সম্পদ নয়, এটি রয়েল বেঙ্গল টাইগারের অন্যতম প্রধান আবাসস্থল এবং উপকূলীয় পরিবেশ রক্ষার গুরুত্বপূর্ণ অংশ।

Next Post Previous Post
No Comment
Add Comment
comment url